
দিনে দিনে মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধি পাচ্ছে. 1950 সালে যেখানে মানুষের গড় আয়ু ছিল 50 বছরের কাছাকাছি, সেখানে আজকের মানুষের গড় আয়ু প্রায় 20 বছর বৃদ্ধি পেয়েছে। গড় আয়ু বৃদ্ধির পেছনে চিকিৎসাবিজ্ঞানের উন্নতির একটা ব্যাপার আছে। চিকিৎসাবিজ্ঞানের উন্নতির পেছনে রয়েছে আধুনিক কিছু প্রযুক্তি, যেগুলোর কল্যাণে সঠিকভাবে রোগ নির্ণয় করা সম্ভব হচ্ছে। একটা সময় ছিল যখন চিকিৎসকেরা রোগীর বিভিন্ন বাহ্যিক লক্ষণ দেখে রোগ নির্ণয় করতেন, শরীরের অনেক কিছু অনুমান করতে হতো। এর ফলে সঠিকভাবে রোগ নিরূপণ করা যেত না। তবে আধুনিক প্রযুক্তির কারণে অনেক নিখুঁতভাবে রোগ নির্ণয় করা যাচ্ছে। আজকের আর্টিকেলে আমরা এমন কয়েকটি প্রযুক্তি সম্পর্কে জানতে চলেছি।
এক্স-রে
রন্টজেন উচ্চশক্তিসম্পন্ন একধরণের বিশেষ রশ্মি আবিষ্কার করেন, যেটি শরীরের মাংস্পেশি ভেদ করে গিয়ে ফটোগ্রাফিক প্লেটে ছবি তুলতে সক্ষম। এর তরঙ্গদৈর্ঘ্য ১০ ন্যানোমিটার থেকে ১০০ পিকোমিটার পর্যন্ত হতে পারে। এক্স-রে থেরাপি কতটা জরুরি তা হয়ত বা অনেক পাঠকই জানেন।
- স্থ্যানচ্যুত হাড়, হাড়ে ফাটল, ভেঙে যাওয়া হাড় ইত্যাদি খুব সহজেই শনাক্ত করা যায়।
- এক্স-রে থেরাপির মাধ্যমে পিত্তথলি ও কিডনিতে পাথরের অস্তিত্ব নির্ণয় করা যায়।
- পেটের এক্স-রে করে অন্ত্রের প্রতিবন্ধকতা শনাক্ত করা যায়।
- দাঁতের ক্যাভিটি এবং অন্যান্য ক্ষয় বের করার জন্য এক্স-রে ব্যবহার করা হয়।
- রেডিও থেরাপিতে ক্যান্সার কোষ ধ্বংসের উদ্দেশ্যে এক্স-রে ব্যবহৃত হয়।
- বুকের এক্স-রে করে ফুসফুসের রোগ, যেমনঃ যক্ষ্মা, নিউমোনিয়া, ফুসফুসের ক্যান্সার নির্ণয় করা যায়।
এক্স-রের অপ্রয়োজনীয় বিকিরণ যেন শরীরে কোনো ক্ষতি করতে না প্রে, সেজন্য প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়। এজন্য কোনো রোগীর এক্স-রে নেওয়ার সময় এক্স-রে করা অংশটুকু ছাড়া বাকি শরীর সীসার তৈরি অ্যাপ্রোন দিয়ে ঢেকে নিতে হয়। অত্যন্ত প্রয়োজন না হলে প্রেগনেন্ট মহিলাদের পেট বা তলপেটের অংশটুকু এক্স-রে করা হয় না। প্রসঙ্গক্রমে একটি কথা বলে রাখি, এক্স-রে মেশিন নিরাপত্তার কাজেও বেশ জনপ্রিয়। লাগেজ, ব্যাগেজের বা ব্যক্তির শরীরে ইলেকট্রনিং ইমেজিং এর মাধ্যমে অবৈধ বস্তুর সন্ধান পাওয়া সম্ভব।
সিটি স্ক্যান
বিভিন্ন কোণ থেকে এক্স-রে টিউবের প্রদক্ষিণের মাধ্যমে শরীরের ভেতরের অঙ্গের অসংখ্য ছবি নেওয়ার প্রযুক্তি Computed Tomography Scan বা CT Scan নামে পরিচিত। সিটি স্ক্যানারের অভ্যন্তরের গ্যান্ট্রির একটি টিউব চারপাশ থেকে এক্স-রে নির্গত করতে থাকে এবং অন্য পাশ থেকে একটি ডিটেক্টর প্রতিবিম্ব গ্রহণ করতে থাকে। প্রতিবিম্বটি স্পষ্ট করার জন্য অনেক সময় রোগীর শরীরে বিশেষ কন্ট্রাস্ট দ্রব্য ইনজেক্ট করা হয় অথবা রোগীকে পান করতে দেওয়া হয়। এই ব্যবস্থায় সম্পূর্ণ যন্ত্রণা বা ব্যাথামুক্ত উপায়ে রোগ নির্ণয় করা হয়ে থাকে। বৃত্তাকার টিউবটি চারপাশের এক্স-রে প্রতিবিম্ব পাওয়ার পর কম্পিউটার দিয়ে সেগুলো বিশ্লেষণ করে সমন্বয় করা হয় এবং একটি অঙ্গের একটি পরিপূর্ণ স্লাইসের অভ্যন্তরীণ গঠন পাওয়া যায়। একটি স্লাইসের ছবি নেওয়ার পর সিটি স্ক্যান করার যন্ত্রটি রোগীকে একটুখানি সামনে সরিয়ে আবার বৃত্তাকার পথে চারদিক থেকে প্রতিচ্ছবি গ্রহণ করে যেগুলো বিশ্লেষণ করে দ্বিতীয় আরেকটি স্লাইসের অভ্যন্তরীণ গঠনের একটি পূর্ণাঙ্গ ছবি তৈরি করে। এভাবে রোগীকে একটু একটু করে সামনে এগিয়ে নিয়ে তাঁর শরীরের কোন একটি নির্দিষ্ট অঙ্গের অনেকগুলো স্লাইসের ডিজিটাল প্রতিচ্ছবি নেয়া হয়। শরীরের কোন একটি অঙ্গের অনেকগুলো স্লাইসের ছবি একত্র করে রোগীর শরীরের ভেতরের সেই অঙ্গের একটা পরিষ্কার এবং উচ্চমানের ত্রিমাত্রিক প্রতিচ্ছবি তৈরি করে নেওয়া হয়। সিটি স্ক্যানের কাজের পদ্ধতি দেখে নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন যে এটি অত্যন্ত ব্যয়বহুল, জটিল এবং একটি বিশাল যন্ত্র। তবে শরীরের ভেতরে না দিয়ে বাইরে থেকে শরীরের ভেতরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ত্রিমাত্রিক ছবি তৈরি করতে পারে বলে সিটি স্ক্যানার আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের খুবই প্রয়োজনীয় একটি যন্ত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখন বলি, সিটি স্ক্যানার দিয়ে কী কী করা যায়।
- সিটি স্ক্যান করে শরীরে নরম টিস্যু, শিরা, ধমনি, ফুসফুস, মস্তিষ্ক ইত্যাদির পূর্ণাঙ্গ ছবি পাওয়া যায়।
- শরীরের রক্ত সঞ্চালনে কোনো অস্বাভাবিকতা আছে কিনা সেটা সিটি স্ক্যান করে জানা যায়।
- সিটি স্ক্যানার শরীরের যেকোনো অংশে টিউমার বা্ ক্যান্সার শনাক্ত করতে পারে
তবে সিটি স্ক্যান যন্ত্র ব্যবহারের আগে সতর্ক থাকা জরুরী। কারণ এই পদ্ধতিতে যেহেতু এক্স-রে ব্যবহা করা হয়, তাই এটি প্রেগনেন্ট মহিলাদের জন্য ক্ষতিকারক হয়ে থাকে। আবার যেই কন্ট্রাস্ট দ্রব্যটি ব্যবহার করা হয়, সেটি শরীরে অ্যালার্জির জন্ম দিতে পারে।
এমআরআই
শক্তিশালী চৌম্বক ক্ষেত্রে প্রয়োগ করলে প্রোটন গুলো চৌম্বক ক্ষেত্রের দিকে সারিবদ্ধ হয়ে যায়, তখন নির্দিষ্ট একটি কম্পানের তড়িৎ চৌম্বকীয় তরঙ্গ পাঠানো হলে এই প্রোটনগুলোকে সেই তরঙ্গ থেকে শক্তি গ্রহণ করে তাদের দিক পরিবর্তন করে। এই প্রক্রিয়াটিকে বলে নিউক্লিয়ার ম্যাগনেটিক রেজোনেন্স বা অনুনাদ। পদার্থবিজ্ঞানের চমৎকার ঘটনাটির উপর ভিত্তি করে ম্যাগনেটিক রেজোনেন্স ইমেজিং বা এমআরআই তৈরি করা হয়েছে। এমআরআই যন্ত্রটি সিটি স্ক্যান যন্ত্রের মতো কিন্তু এর কার্যক্রমের সম্পূর্ণ ভিন্ন। সিটি স্ক্যান যন্ত্রে এক্স-রে পাঠিয়ে প্রতিচ্ছবি নেওয়া হয়, এমআরআই যন্ত্রে একজন রোগীকে অনেক শক্তিশালী চৌম্বক ক্ষেত্রে রেখে তার শরীরে রেডিও ফ্রিকোয়েন্সির তড়িৎচৌম্বকীয় তরঙ্গ দেয়া হয়। মানুষের শরীরের প্রায় 70 ভাগ পানি। এর মানে মানুষের শরীরের প্রায় সব অঙ্গ প্রত্যঙ্গে পানি থাকে। শরীরের পানির অণুর ভেতরকার হাইড্রোজেনের প্রোটন থেকে ফিরে আসা সংকেতকে কম্পিউটার দিয়ে বিশ্লেষণ করে শরীরের ভেতরকার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের প্রতিবিম্ব তৈরি করা হয়। সিটি স্ক্যান দিয়ে যা করা সম্ভব, এমআরআই দিয়েও সেগুলো করা যায়। তবে এমআরআই দিয়ে শরীরের ভেতরকার কোমল টিস্যু সম্পর্কে ভালো করে বোঝা সম্ভব। সিটি স্ক্যান করতে 5 থেকে 10 মিনিটের বেশি সময়ের দরকার হয় না, তবে সিটি স্ক্যানের তুলনায় এমআরআই করতে একটু বেশি সময়ের প্রয়োজন হয়। সিটি স্ক্যানে এক্স-রে ব্যবহার করা হয় বলে, যত কমই হোক তেজস্ক্রিয়তার একটু ঝুঁকি থাকে। কিন্তু এমআরআই এর ক্ষেত্রে সেই ঝুঁকি নেই। শরীরের ভেতর কোন ধাতব বস্তু(যেমনঃ পেসমেকার) কিছু থাকলে এমআরআই করা যায় না। কারণ আর এফ তরঙ্গ ধাতুকে উত্তপ্ত করে বিপদজনক পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে।
আলট্রাসনোগ্রাফি
আলট্রাসনোগ্রাফি যন্ত্রে ট্রান্সডিউসার নামে একটি স্ফটিককে বৈদ্যুতিক শক্তি দিয়ে উদ্দীপ্ত করে উচ্চ কম্পাংকের আলট্রাসনিক ওয়েভ উৎপন্ন করা হয়। আলট্রাসনিক মেশিনে এই তরঙ্গকে একটা সরু বিমে পরিণত করা হয়। শরীরের ভেতরের যে অংশটির প্রতিবিম্ব দেখার প্রয়োজন হয়, ট্রান্সডিউসারটি শরীরের উপরে সেখানে স্পর্শ করে বিমটিকে শরীরের ভেতরে প্রবেশ করানো হয়। সেজন্য রোগী কোনোরকম ব্যাথা বা অস্বস্তি অনুভব করে না। যে অঙ্গের দিকে বিমটি নির্দেশ করা হয়, সেই অঙ্গের প্রকৃতি অনুযায়ী আলট্রাসনিক ওয়েভ প্রতিফলিত, শোষিত বা সংবাহিত হয়। যখন বিমটি মাংসপেশি বা রক্তের বিভিন্ন ঘনত্বের বিভেদতলে আপতিত হয়, তখন তরঙ্গের একটি অংশ প্রতিধ্বনিত হয়ে পুনরায় ফিরে আসে। এই প্রতিধ্বনিগুলোকে বৈদ্যুতিক সংকেতে রূপান্তর করে সমন্বিত করার পর একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবিম্ব তৈরি করে। তো, এবার জেনে নেওয়া যাক আল্টাসনোগ্রাফি কোন কাজগুলো করার জন্য ব্যবহার করা হয়।
- আলট্রাসনোগ্রাফির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যবহার স্ত্রীরোগ ও প্রসূতি বিজ্ঞানে। এর সাহায্যে ভ্রূণের আকার, গঠন, স্বাভাবিক বা অস্বাভাবিক অবস্থান ইত্যাদি জানা যায়। প্রসূতিবিজ্ঞানে এটি একটি দ্রুত, নিরাপদ এবং নির্ভরযোগ্য পদ্ধতি।
- আলট্রাসনোগ্রাফি দিয়ে জরায়ুর টিউমার এবং অন্যান্য পেলভিক মাসের উপস্থিতি শনাক্ত করা যায়।
- পিত্তপাথর, হৃদপিণ্ডের ত্রুটি এবং টিউমার বের করার জন্যও আলট্রাসনোগ্রাম ব্যবহার করা হয়। একটা বিষয় পাঠকদের জন্য জেনে রাখা ভালো যে হৃদপিণ্ড পরীক্ষা করার জন্য যখন আলট্রাসাউন্ড ব্যবহার করা হয় তখন ঐ পরীক্ষাকে ইকোকার্ডিওগ্রাফি বলা হয়।
- শরীরের যেকোনো ধমনি বা শিরার রোগ নির্ণয়ে ডুপ্লেক্স আলট্রাসাউন্ড ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
এক্স-রে এর তুলনায় আলট্রাসনোগ্রাফি অনেক বেশি নিরাপদ। তবুও এটিকে ঢালাও ভাবে ব্যবহার না করে সীমিত সময়ের জন্য ব্যবহার করা হয়। এটি যেন কোনো নির্দিষ্ট স্থানে বেশি সময়ের জন্য একটানা বিম না পাঠায়, সেজন্য আলট্রাসনোগ্রাম করার সময় ট্রান্সডিউসারটিকে ক্রমাগত নড়াচড়া করা অত্যন্ত জরুরি।
এন্ডোসকপি
এন্ডোস্কোপ যন্ত্র ব্যবহার করে দেহের ভিতরের অঙ্গগুলি দেখার প্রক্রিয়াকে এন্ডোসকপি বলা হয়। এন্ডোস্কোপ হল একটি লম্বা, পাতলা, নমনীয় টিউব, যার এক প্রান্তে লাইট এবং ক্যামেরা থাকে। এই যন্ত্রটির নল মুখের মাধ্যমে বা গলার নিচে বা মলদ্বার ও তৎপার্শবর্তী অঞ্চল দিয়ে শরীরে প্রবেশ করানো যেতে পারে। এন্ডোসকপি করে চিকিৎসকেরা যেকোনো ধরণের অস্বস্তিবোধ, ক্ষত, প্রদাহ এবং অস্বাভাবিক কোষবৃদ্ধি পরীক্ষা করে থাকেন। যে অঙ্গগুলো পরীক্ষা করার জন্য এন্ডোসকপি ব্যবহার করা হয়, সেগুলো হলোঃ ফুসফুস, বুকের কেন্দ্রীয় বিভাজন অংশ, পাকস্থলী, অন্ত্র, স্ত্রী প্রজননাঙ্গ, উদর, পেলভিস, মূত্রনালির অভ্যন্তর ভাগ, নাসাগহ্বর, সাইনাস, কান ইত্যাদি। এন্ডোসকপি করার সময় একটি নল সরাসরি ক্ষত স্থানে প্রবেশ করিয়ে সেই ক্ষত স্থানের স্যাম্পল নিয়ে আসা সম্ভব এবং প্রয়োজনে এটা ব্যবহার করে কিছু কিছু সার্জারিও করা সম্ভব।
এনজিওগ্রাফি
এক্স-রের মাধ্যমে শরীরের রক্তনালিগুলো দেখার জন্য এনজিওগ্রাফি করা হয়। সাধারণ এক্স-রে করে রক্তনালী ভালো ভাবে দেখা যায় না বলে এনজিওগ্রাফি করার সময় রক্তনালিতে বিশেষ কনট্রাস্ট ম্যাটারিয়াল বা ডাই ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। রক্তনালির যে অংশটুকু পরীক্ষা করতে হবে ঠিক সেখানে ডাই দেওয়ার জন্য একটি সরু এবং নমনীয় নল কোনো একটি ধমনি দিয়ে শরীরের ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। এই সরু এবং নমনীয় নলটিকে বলে ক্যাথিটার। ক্যাথিটার দিয়ে রক্তনালীর নির্দিষ্ট জায়গায় ডাই বা কন্ট্রাস্ট ম্যাটারিয়াল দেওয়ার পর সে অংশে এক্স-রে নেওয়া হয়। কন্ট্রাস্ট ম্যাটারিয়াল থাকার কারণে এক্স-রেতে রক্তনালীগুলোকে স্পষ্ট দেখা যায়। ঐ ম্যাটারিয়াল পরে কিডনির সাহায্যে ছেঁকে সহজেই আলাদা করা হয় এবং প্রস্রাবের সাথে দেহ থেকে বের হয়ে যায়। সাধারণত যেসব সমস্যা পরীক্ষা করার জন্য ডাক্তাররা এনজিওগ্রাম করার পরামর্শ দেন সেগুলো হলোঃ
- হৃদপিন্ডের বাইরের ধমনীতে ব্লকেজ হলে। রক্তনালী ব্লক হলে রক্তের স্বাভাবিক প্রবাহ ব্যহত হয়। হৃদপিন্ডে যথেষ্ঠ রক্ত প্রবাহিত না হলে সেটি সঠিকভাবে কাজ করতে পারে না এবং হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা বেড়ে যায়।
- ধমনি প্রসারিত হলে কিংবা কিডনির ধমনির অবস্থাগুলো বোঝার জন্য এনজিওগ্রাম করা হয়
- শিরার কোন সমস্যা হলে এনজিওগ্রাম করা অত্যন্ত জরুরি
সিটি স্ক্যান বা এমআরআই করার সময় সকল পরীক্ষা শরীরের বাইরে থেকে করা হয়। এনজিওগ্রাম করার সময় একটি ক্যাথিটার দেহাভ্যন্তরের রকতনালিতে ঢোকানো হয় বলে কোনো রকম Surgery না করেই তাৎক্ষণিকভাবে রক্তনালীর ব্লকের চিকিৎসা করা সম্ভব। যে প্রক্রিয়ায় এনজিওগ্রাম করার সময় ধমনির ব্লক মুক্ত করা হয়, তাকে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় এনজিওপ্লাস্টি বলা হয়। এনজিওপ্লাস্টি করার সময় ক্যাথিটার দিয়ে ছোট একটি বেলুন পাঠিয়ে সেটি ফুলিয়ে রক্তনালিকে প্রসারিত করে দেখা হয়। অনেক ক্ষেত্রে সেখানে একটি রিং ঢুকিয়ে দেওয়া হয়, যেন সংকোচিত ধমনিটি প্রসারিত থাকে এবং প্রয়োজনীয় রক্ত প্রবাহিত হতে পারে।
এছাড়াও বর্তমানে রোগ নির্ণয়ে ও চিকিৎসায় অন্যান্য আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহৃত হচ্ছে, যেমনঃ ইসিজি, ইটিটি, নিউক্লিয়ার মেডিসিন ইত্যাদি। যার ফলে সময়ের সাথে সাথে চিকিৎসাবিজ্ঞান সমৃদ্ধ ও আধুনিক হচ্ছে। বর্তমানে এমআইটি, হার্ভার্ড, অক্সফোর্ডসহ বিভিন্ন নামী-দামী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বায়োফিজিক্সের উপর মৌলিক গবেষণা চলছে। এর ফলে মেডিকেল সায়েন্সের খাতায় নতুন নতুন আবিষ্কার যুক্ত হচ্ছে। আশা করা যায়, আগামী এক দশকের মধ্যে রোগ নির্ণয়ের জন্য আরও সাশ্রয়ী এবং অত্যাধুনিক প্রযুক্তি উদ্ভাবিত হবে। এভাবেই দিনের পর দিন মানুষের স্বাস্থ্যসেবা উন্নত হতেই থাকবে। তো, এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনি যদি নতুন কোনো বিষয় জেনে থাকেন তবে অবশ্যই পরিচিতদের সাথে শেয়ার করবেন এবং আপনারও যদি এমন কোনো বিষয় জানা থাকে, তবে কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না।